Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী ও তাদের খাওয়া শেষ খাবার: পর্ব ২

মৃত্যুদন্ড শব্দটির বাহ্যিক ব্যাপ্তি যতটুকু, তার পেছনের গল্পগুলোর পরিসীমা তা ছাপিয়ে বহুদূর। ঘোর অপরাধী হবার দরুণ আইনের গড়াপেটা কঠিন শাস্তি হিসেবে জীবনাবসানের বার্তা ভাগ্যে জোটে অনেকের। ঐতিহ্য, নিয়ম কিংবা মানবতার খাতিরেই কখনো কখনো এদের দেয়া হয় জীবনের শেষ স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ- তাদের পছন্দানুসারে অন্তিম খাবার নির্ধারণের সুযোগ। এসব খাবারের ইচ্ছাগুলো বেশ চমকপ্রদ- কখনো তা পরিমাণের দিক থেকে, কখনো বা ভিন্ন আঙ্গিকে। তেমনই কিছু অপরাধীর জীবনের শেষ খাবারের গল্প নিয়ে সাজানো লেখাটির ২য় পর্ব।

ফিলিপ ওয়র্কম্যান

সম্ভবত এই শেষ খাবারের অনুরোধটি বেশ চমকপ্রদ ইচ্ছেগুলোর একটি। ২০০৭ সালে টেনেসিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আগে নিজের জন্য খাবার চায়নি সে, তার শেষ ইচ্ছা ছিল একটি বড় ভেজিটেরিয়ান পিজ্জা যেন ন্যাশভিলের এক উদ্বাস্তুকে দেয়া হয়। জেল কর্তৃপক্ষ যদিও তার এই ইচ্ছে পূরণ করে নি, কিন্তু টেনেসির সাধারণ মানুষ তা রেখেছিল। তার মৃত্যুদন্ড কার্যকরের দিন টেনেসির অনেক মানুষ প্রায় শ’খানেক পিজ্জা নিয়ে ন্যাশভিলের গৃহহীনদের মাঝে বিতরণ করেছিল।

ফিলিপ ওয়র্কম্যান

জোসেফ মিচেল পারসন্স

রিচার্ড লিন আর্নস্ট নামক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ১৯৯৯ সালে উতাহ তে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয় এই ব্যক্তির। তার শেষ খাবারের তালিকায় ছিল তিনটি বার্গার কিং হুপার্স বার্গার, দুটো বড় আকারের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এর অর্ডার, চকোলেট চিপ আইসক্রিম ও এক প্যাকেট গ্রেপ হুব্বা বুব্বা বাবলগাম। তার অ্যাটর্নীর মতে অন্তিম খাবার হিসেবে বার্গার কিং এর খাবার বেছে নেবার কারণ হলো বার্গার কিং এর স্লোগান ‘হ্যাভ ইট ইওর ওয়ে’ কথাটি সে নিজে যেভাবে তার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলো তারই একপ্রকার প্রতিফলন ছিল।

জোসেফ মিচেল পারসন্স

জন ডেভিড ডিউটি

ওকলাহোমার ‘ওয়ান্টেড’ তালিকাভুক্ত এই অপরাধীকে অপহরণ, ধর্ষণ, লুন্ঠন ও লিন্ডা হল নামের এক নারীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার (১৮ই জুলাই, ১৯৭৮) জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। ২০০২ সালের ২৮শে অক্টোবর তার সঙ্গে থাকা এক কয়েদীকে হত্যা করার জন্য তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। ২০১০ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আগে এই ব্যক্তির শেষ খাবার ছিল মেয়োনেজ সহ ডাবল চিজবার্গার, পনিরযুক্ত ফুট-লং হটডগ, মাস্টার্ড এবং পেঁয়াজ। সঙ্গে চেরি লাইমিয়েড ও ব্যানানা আইসক্রিম শেক খেয়েছিল এই ব্যক্তি।

জন ডেভিড ডিউটি

ভেলমা বারফিল্ড

১৯৭১-৭৮ সালের ভেতর মোট ৬টি খুন করে এই ক্রমিক খুনী যার মধ্যে আর্সেনিক ও ইঁদুর মারার বিষের ব্যবহার ছিল। এই খুনী ইউনাইটেড স্টেটস এর প্রথম মহিলা যাকে বিষাক্ত ইনজেকশনযোগে মৃত্যু দেয়া হয়। বিশেষ খাবার খেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অন্তিম খাদ্য সে হিসেবে বেছে নেয় এক ব্যাগ চীজ ডুডল এবং ১২ আউন্স কোকাকোলা।

ভেলমা বারফিল্ড

মারিওন আলবার্ট প্রুয়েট

রসিকতা করে বলা হয় এই ব্যক্তি যে খাবারের ফরমায়েশ দিয়েছিল তা ছোটখাট একটি লুটেরা দলকে খাওয়ানো যাবে। যদিও এই ব্যক্তির ভাষ্যমতে সে তার চাওয়া খাবারগুলি একই দিনে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হবে এমন অন্য একজনের সাথে ভাগাভাগি করে খেতে চেয়েছিল। সে চেয়েছিল পিজ্জা হাটের স্টাফড ক্রাস্ট পিজ্জা, বার্গার কিং এর চারটি লার্জ সাইজ হুপার বার্গার, একটি বড় ফ্রেঞ্চফ্রাইয়ের অর্ডার, তিনটি দুই লিটারের পেপসির বোতল, ফ্রাইড এগপ্ল্যান্ট, ফ্রাইড স্কোয়াস, ফ্রাইড ওকরা এবং একটি গোটা পেকান পাই। সে একটি আস্ত হাঁসের রোস্টেরও অনুরোধ করতে চেয়েছিল কিন্তু নিজেই বিশ্বাস করেনি জেল কর্তৃপক্ষ তার জন্য এটা রান্না করবে।

মারিওন আলবার্ট প্রুয়েট

থমাস জে. গ্র্যাসো

দশাসই প্রকৃতির খাবারের অনুরোধ করতে এই লোকটিও পিছপা হয়নি। তার শেষ খাবারের অনুরোধ ছিল দুই ডজন স্টীমড মাসেল, দু’ডজন স্টীমড ক্ল্যাম, ছয়টি বার্বিকিউ করা স্পেয়ার রিবস, বার্গার কিং এর একটি ডাবল চীজবার্গার, দুটো স্ট্রবেরী মিল্কশেক, হুইপড ক্রিম সহ অর্ধেক পামকিন পাই, ডাইস আকারে কাটা স্ট্রবেরী। তবে এই শেষ নয়, স্প্যাগেটি এবং মিটবলের ১৬ আউন্স ক্যানের ফরমায়েশও দিয়েছিল সে। যদিও পরে এই ব্যক্তি অভিযোগ করে বসে- সাধারণ স্প্যাগেটি নয়, ‘স্প্যাগেটি ও’ ছিল তার চাওয়া। ১৯৯৫ সালে ওকলাহোমায় তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

থমাস জে. গ্র্যাসো

আলোকচিত্রীর চোখে থমাস জে. গ্র্যাসোর খাওয়া শেষ খাবার

বার্টন কে. কিরখাম

১৯৫৮ সালে মৃত্যুদন্ড দেয়া এই ব্যক্তির শেষ খাবার ছিল পিজ্জা এবং আইসক্রিম। তার ভাষ্যমতে সে এটা খেতে চেয়েছিল কারণ- “কারণ আপনি পনির, মাংস এবং অন্যান্য সবকিছুই এই একটি খাবারে পাচ্ছেন।”

বার্টন কে. কিরখাম

ডবি গিলস উইলিয়ামস

শেষ খাবার হিসেবে ১২টি চকোলেট বার এবং আইসক্রিম চেয়েছিল এই ব্যক্তি।

ডবি গিলস উইলিয়ামস

আলোকচিত্রীর কল্পনায় ডবি গিলস উইলিয়ামসের খাওয়া শেষ খাবার

এডলফ হিটলার

যেহেতু হিটলারকে জীবিত ধরা যায়নি কোনোদিন তাই তার শেষ খাবারের অনুরোধের প্রশ্নই ওঠে না। তবে তার নতুন স্ত্রী এবং তিনি সায়ানাইড ক্যাপস্যুল খেয়ে আত্মহত্যা করার আগে হালকা সস সহযোগে এক ধরণের পাস্তা (হতে পারে স্প্যাগেটি কিংবা লাসাগনা) খেয়েছিলেন।

এডলফ হিটলার

জেরাল্ড লী মিচেল

২০১১ সালে টেক্সাসে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের পূর্বে কোনো পরিপূর্ণ খাবার চায়নি এই ব্যক্তি। খাবার হিসেবে তার শেষ চাওয়া ছিল এক ব্যাগ অ্যাসর্টেড জলি র‍্যাঞ্চার্স ক্যান্ডি।

জেরাল্ড লী মিচেলের খাওয়া শেষ খাবার

লরেন্স রাসেল ব্রিউয়ার

জেমস বার্ড নামক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ২০১১ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর এই ব্যক্তির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। অন্তিম খাবার হিসেবে পেঁয়াজ ও গ্রেভিসহ দুটো ফ্রাইড চিকেন স্টেক, একটি ট্রিপল বেকন চীজবার্গার, একটি বিফ-চীজ অমলেট, বড় এক বাটি ভর্তি ভাজা ঢেড়স, তিনটি ফাজিতা, এক পাউন্ড বার্বিকিউ করা মাংস ও আধালোফ হোয়াইট ব্রেড, একটি মিট লাভার্স পিজ্জা, তিনটি রুট বিয়ার, এক পাইন্ট ব্লুবেল ভ্যানিলা আইসক্রিম এবং পিনাট বাটার ফাজ চেয়েছিল সে। অবাক করা ব্যাপার হলো এত কিছুর অনুরোধ করা সত্ত্বেও এর কোনোটিই সে খায়নি! এরপর থেকে টেক্সাসে ইচ্ছানুসারে শেষ খাবার দেবার চলটা উঠে যায়।

আলোকচিত্রীর কল্পনায় লরেন্স রাসেল ব্রিউয়ারের খেতে চাওয়া শেষ খাবার

রবার্ট বুয়েল

শেষ খাবার হিসেবে কালো জলপাই চেয়েছিল সে। কেন সে এটি চেয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা নেই। তবে অন্তিম খাবার হিসেবে তার ইচ্ছানুসারে বীজবিহীন ব্ল্যাক অলিভই খেয়েছিল সে।

আলোকচিত্রীর কল্পনায় বুয়েলের খাওয়া শেষ খাবার

রবার্ট বুয়েল

উইলিয়াম বনিন

ধর্ষণ ও ২১ জনকে হত্যাসহ অন্যান্য অপরাধে মৃত্যুর সাজা হয় এ ব্যক্তির। দুটো পিজ্জা ও চকোলেট আইসক্রিম শেষবারের মতো খাওয়ার পর মোট ১৮টি কোলা (পেপসি ও কোকাকোলা মিলিয়ে) খায় সে।

উইলিয়াম বনিন

 

ব্রুনো রিচার্ড হপ্টম্যান

১৯৩৬ সালে হত্যার দায়ে নিউ জার্সিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়া এই ব্যক্তির অন্তিম খাবার ছিল সেলেরি, জলপাই, স্যামন সালাদ, কর্ন ফ্রিটার্স, কাটা পনির, ফ্রুট সালাদ, এক স্লাইস কেক, কফি এবং দুধ।

ব্রুনো রিচার্ড হপ্টম্যান

ওডেল বার্নস

এই ব্যক্তির বিচারের সময় কম নাটকীয়তার অবতারণা হয়নি। একটি বাড়িতে ডাকাতির সময় এক মহিলাকে খুনের দায়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর সাজা হয় তার। শেষবারের মতো কিছুই খেতে চায়নি এই ব্যক্তি। শেষ খাবারের পরিবর্তে তার চাওয়া ছিল ন্যায়, সমতা ও বিশ্বশান্তি। বলা বাহুল্য, সত্যিই যদি জেল কর্তৃপক্ষের এ দেবার ক্ষমতা হতো, পৃথিবীটা বর্তমানের থেকে আরো বেশি সুন্দর হতো।

ওডেল বার্নস

ক্ল্যারেন্স রে অ্যালেন

যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রৌঢ়তম ব্যক্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড পাওয়া এই ব্যক্তির শেষ খাবার বেশ অদ্ভুত ছিল। স্টেক ও চিকেনের সাথে অন্তিম খাদ্য হিসেবে সে চেয়ে বসে সুগারফ্রি ব্ল্যাক ওয়ালনাট আইসক্রিম! আইসক্রিমের আবেদন নিয়ে আমাদের কারোই কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু তাই বলে সুগারফ্রি? এমন আইসক্রিম চেয়ে বসাটা বেশ চমকপ্রদই ছিল বটে!

ক্ল্যারেন্স রে অ্যালেন

অ্যান্ড্রু চ্যান ও ম্যুরান সুকুমারান

ইন্দোনেশিয়ার ‘বালি নাইন হিরোইন স্মাগলার্স’ গ্রুপের এই দুই রিং লিডারকে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে মৃত্যু দেয়া হয়। মৃত্যুর আগে তারা কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেনের (কেএফসি) খাবার খেয়েছিল।

অ্যান্ড্রু চ্যান ও ম্যুরান সুকুমারান

সাদ্দাম হুসেইন

প্রাক্তন ইরাকি রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হুসেইনকে ২০০৬ সালে ফাঁসি দেয়া হয়। মৃত্যুর আগে তিনি শেষ কি খেয়েছিলেন তা নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। কারো কারো দাবি তিনি পশ্চিমা খাবার খেয়েছিলেন যার মধ্যে হ্যামবার্গার এবং ফ্রাইয়ের মতো খাবার ছিল। আবার অনেকের দাবি তাকে মুরগীর মাংস এবং শর্মা রাইস দেয়া হয়েছিল মৃত্যুর আগে, কিন্তু তিনি তা খাননি।

সাদ্দাম হুসেইন

এডলফ এইচম্যান

১৯৬২ সালে ইসরাইলে নাৎসি বাহিনীর এই উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। সে কোনো খাবার চায়নি। বরং তার শেষ চেখে দেখা বস্তুটি ছিল এক বোতল কারমেল (একপ্রকার লাল ইসরায়েলি মদবিশেষ)। তবে বোতলের মাত্র অর্ধেক পানীয়ই খেয়েছিল সে।

এডলফ এইচম্যান

ড্যানিয়েল লুকাস

স্টিভেন মস ও তার দুই সন্তানকে হত্যার দায়ে তার মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। ১৬ বছর অপেক্ষমান থেকে ২০১৬ সালে জর্জিয়াতে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগে মৃত্যু হয় এই ব্যক্তির। এই ব্যক্তির শেষ খাবার ছিল একটি মিট পিজ্জা, একটি স্টেক অ্যান্ড চীজ ক্যালজোন এবং দুটি পোর্তোবেল্লো মাশরুম। সাথে ছিল র‍্যাঞ্চ ড্রেসিং ও অতিরিক্ত হানি মাস্টার্ড ড্রেসিং সহ শেফ সালাদ এবং অরেঞ্জ জুস।

ড্যানিয়েল লুকাস

 

আলোকচিত্রীর কল্পনায় ড্যানিয়েল লুকাসের খাওয়া শেষ খাবার

পিটার জে. মিনিয়েল

মৃত্যুদন্ড কার্যকরের জন্য অপেক্ষমান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম বিশালাকায় শেষ খাবারটির ফরমায়েশ যে এই লোক দিয়েছিল তা অনায়াসে বলা চলে। তার চাওয়া খাবারগুলো ছিল ২০টি বীফ ট্যাকো, ২০ টি বীফ এনচিলাদাস, ২টি ডাবল চীজবার্গার, একটি জালাপেনো পিজ্জা, ফ্রাইড চিকেন, স্প্যাগেটি, ফ্রুটকেক, অর্ধেক চকোলেট কেক, অর্ধেক ভ্যানিলা কেক, কুকিজ অ্যান্ড ক্রিম ও ক্যারামেল পেকান ফাজ আইসক্রিম, ২টি কোক, ২টি পেপসি, ২টি রুট বিয়ার এবং দু’গ্লাস অরেঞ্জ জুস। খাওয়ার ভালই ক্ষমতা ছিল বলতে হবে!

আলোকচিত্রীর চোখে- কেমন হতে পারে পিটার জে. মিনিয়েলের চাওয়া খাবারের বহর

রিচার্ড মাস্টারসন

বেকড চিকেন, ম্যাশড পটেটো, কান্ট্রি গ্রেভি, গাজর, ব্ল্যাক আইড পি’জ, স্লাইস করা ব্রেড এবং পছন্দসই পানীয় ছিল তার শেষ খাবার।

আলোকচিত্রীর কল্পনায় রিচার্ড মাস্টারসনের অন্তিম খাবার

অ্যাডাম ওয়ার্ড

বিষাক্ত ইনজেকশনযোগে মেরে ফেলার আগে তার দাবী ছিল তাকে মারাটা ঠিক হচ্ছে না। ৮ বছর অপেক্ষমান থেকে ২০১৬ সালের মার্চ মাসে তার সাজা কার্যকর হয়। তার শেষ খাবার ছিল সালসা ও স্প্যানিশ রাইস সহ নরম বীফ ট্যাকো, মিক্সড গ্রীনস, কর্ন, বিনস এবং ময়দার টরটিলা। সাথে ছিল পছন্দসই পানীয় বাছাইয়ের সুযোগ।

অ্যাডাম ওয়ার্ড

আলোকচিত্রের কল্পনায় অ্যাডাম ওয়ার্ডের খাওয়া শেষ খাবার

জোশুয়া বিশপ

একজনকে পিটিয়ে মারার দায়ে মৃত্যুদন্ড পায় সে। ২০ বছর অপেক্ষমান থেকে ২০১৬ সালের মার্চ মাসে সাজা কার্যকর হয় তার। শেষ খাবার হিসেবে  বার্বিকিউ স্যান্ডউইচ, কোলস্ল, ব্রান্সউইক স্টু, আলুর চিপস, লেমোনেড ও পার্পল ললি ক্যান্ডি খেয়েছিল সে।

জোশুয়া বিশপ

আলোকচিত্রীর কল্পনায় জোশুয়া বিশপের খাওয়া শেষ খাবার

পাবলো ভাসকুয়েজ

ভ্যাম্পায়ার কিলার নামে পরিচিত এই ব্যক্তি ডেভিড কার্ডেনাস নামক ১২ বছরের বালককে হত্যার দায়ে ১৯৯৮ সালে মৃত্যুর সাজা পায়। ৩৮ বছর বয়সী এই ঘাতক বালকটির রক্ত পান করেছিল বলে জানা যায়। শেষ খাবার হিসেবে স্টেক ও রাইস চাওয়ায় তাকে স্যালসিবেরি স্টেক, স্টীমড রাইস, ব্রাউন গ্রেভি, ভেজিটেবল ব্লেন্ড, ব্রেড, বাটারস্কচ ব্রাউনি ও পছন্দসই পানীয় দেয়া হয়। ১৭ বছর অপেক্ষায় থাকার পর ২০১৬ সালের ৬ই এপ্রিল তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

আলোকচিত্রীর চোখে পাবলো ভাসকুয়েজের খাওয়া অন্তিম খাবার

ট্রয় ডেভিস

শেষ খাবার খেতে নাকচ করে দেয় এই ব্যক্তি। তার ভাষ্যমতে- “এটি আমার শেষ খাবার হবে না।” তার দাবী ছিল তাকে সেই অপরাধের শাস্তি পেতে হচ্ছে যা সে করেনি। এই ব্যক্তির মৃত্যুদন্ডের রায় নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়ে গেছে।

ট্রয় ডেভিস

ট্রয় ডেভিসের শাস্তির প্রতিবাদ করছে মানুষ

মৃত্যু প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ বলা চলে এমন সময়ে মৃত্যুদন্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তির শেষ খাওয়া বাছাইয়ের ব্যপারটি তাকে একরকম অন্তিম ইচ্ছে পূরণ কিংবা স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ করার শেষ সুযোগ দেয়া। এদের কেউ কেউ সেটি গ্রহণ করেনি, আবার কেউ এই সুযোগে শেষবারের মতো আস্বাদন করে নিয়েছে জীবনকে। শেষ খাবারের অনুরোধের চল তাই আসামীর শেষ ইচ্ছে পূরণের একটি ক্ষুদ্র মাধ্যম।

(লেখাটির কিছু ছবি ও তথ্য হেনরি হারগ্রিয়েভস এর “নো সেকেন্ডস” সিরিজ থেকে নেয়া। “নো সেকেন্ডস” সিরিজটি অপরাধীদের মৃত্যু এবং তার আগে তাদের পছন্দসই খাবার দেয়ার অনুরোধ কে ঘিরে তৈরি। তার মতে একটি মানুষের চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব তার পছন্দ করা খাবারের মাধ্যমে ফুটে ওঠে। মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে থাকা আসামীদের খাবার বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত এই তত্ত্বটিকেই আরো জোরদার করে তুলে ধরে।

তার তোলা সকল ছবিই (এবং এখানে ব্যবহৃত অন্যান্য শেষ খাবারের ছবিগুলো) আসলের একপ্রকার পুনর্মঞ্চায়ন করা। অর্থাৎ যেহেতু আসল শেষ খাবারের ছবি কখনোই পাওয়া যায় না বাইরে, তাই খাবারগুলো সম্বন্ধে জেনে তা নিজেরমতো সাজিয়ে বাস্তবতার আভাস চিত্রায়নের প্রচেষ্টা করেছেন তিনি।)

তথ্যসূত্র

১) brainjet.com/random/9553/15-real-death-row-requests-that-will-send-a-chill-down-your-spine?story_page=6

২) news.com.au/world/north-america/last-meals-and-last-words-of-19-men-executed-on-americas-death-row-this-year/news-story/8edc60456491f3beb75695f86cae4df4

৩) therichest.com/rich-list/most-shocking/top-20-craziest-last-meal-requests-from-death-row/

৪) metro.co.uk/2016/12/21/photographer-recreates-last-meals-of-death-row-inmates-from-2016-6336904/

৫) list25.com/25-strangest-death-row-inmate-last-meal-choices/

৬) oldcatlady.com/13-death-row-last-meal-requests-that-will-send-a-chill-down-your-spine/?singlepage=1

 

This article is in Bangla. It is about

References:

Featured Image: 

Related Articles